নাটক: দি জেন্টেলম্যান

সংসার সুখের হয়, দু:খের হয়। অনেক টাকাতে সুখ। অনেক টাকাতে দুখ। আবার কম টাকাতে সুখ। কম টাকাতে দুখ। আমার অভাবের সংসার। আমার স্বামীর ইনকাম কম। বেসরকারী চাকুরী করে। খুব ভোরে বের হয়, অনেক রাত করে ফিরে। সারাদিন খেটে-খুটে আমার দেয়া টিফিন ক্যারিয়ারের নাস্তা করে। আমাকে দেখে শুনে খরচাপাতি করতে হয়। তাই বলে আমি কৃপণ না। যত কৃপটামি করি তা আমার নিজের জন্য। ঈদে আমি কম টাকার শাড়ি কিনি। আমি বাপের বাড়ি কম যাওয়া আসা করি। ছেলে-পুলেকে আগলে রাখি। আমরা অল্প টাকার ভাড়া বাসায় থাকি। আমার বাসাতে সোফা নেই, ডাইনিং টেবিল নেই। আমরা খাটে বসে খাই।

শুধু মাত্র এই কথাগুলোর চিন্তাতেই সুখ আর দু:খ দুটোই আছে। এসব সুখের চিন্তা করলে সুখের আবার দু:খের চিন্তা করলেও দু:খের কারণের জন্য এসব স্বাভাবিক।

নাটক দি জেন্টলম্যান, দেখে খুব ভালো লেগেছে। বাস্তবতা অনেক কঠিন। নাটক আর বাস্তবতা ভিন্ন। হইতে পারে নাটকের সাথে বাস্তবতার মিল থাকে না। তারপরেও এই নাটক আমাদের নাড়া দিবে। ভাবাবে..।

যদিও এখানে স্বামীকে খুব ভালো চরিত্র দেখিয়েছে। ব্যাপার হলো এইরকম ভালো স্বামীও তো আছে। আবার অন্য দিকে স্ত্রীর সুখ চাওয়াটাও তো দোষের কিছুনা। শুধু প্রশ্ন হলো, এই সুখ কি শুধু অর্থ-বিত্তে নাকি আমাদের যেমন অর্থ-বিত্তই থাকনা কেন আমরাই সর্ব অবস্থাই সুখে থাকবো এই মানসিকতা।

নাটকের শেষ কথাগুলো হুবহু তুলে ধরলাম…

“শিউলি, সকাল বেলা তুমি যখন চলে যাচ্ছিলে তখন আমার মনে হচ্ছিল তোমারে বলি, শিউলি তুমি যাইয়ো না। কোন জোরে আমি এই কথা বলবো। কারণ, আমি তো তোমাকে রাখতে পারবো না। আমি যখন দেখলাম তুমি ফয়সালের সাথে দামি রেস্টুরেন্টে বসে খাইতেছো, হাসতেছো। আমার খুব দু:খ লাগার কথা, খুব কষ্ট লাগার কথা। শিউলি, আমার এসবগুলো কিছুই হয় নাই। কারণ আমার অনেক দিনের চাওয়া ছিল, তোমার হাসি মুখটা দেখার। আমি সেদিন তোমার হাসি মুখটা দেখলাম। আমার জীবনের একটাই বোধ হয় সফলতা, অদ্ভুত সফলতা। সেটা অন্যের ঘরে হলেও তোমার সুখ।”

সমাজের শিউলিরা সুখে থাক। দু:খকে বরণ করেই সুখে থাক। শিউলিরা ফিরে আসুক। শিউলিরা না থাকলে এই সংসার আর কিসের জন্য, কার জন্য। শিউলিদের জন্য ভালোবাসা।

রিভিউ লেখা: রাশেদুল হায়দার

[embedyt] https://www.youtube.com/watch?v=Dvcx1SMj1rs[/embedyt]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Post

শুভ জন্মদিন ২০২২

আজ আমার তেত্রিশ মতান্তরে পঁয়ত্রিশতম শুভ জন্মদিন! (বয়সে করোনাকালিন হিসেব বাদ দেয়া হয়েছে) ছবিটি আনুমানিক ২০ বছর আগের হারিকেন জমানার। ছত্রিশ ফিল্মের কোডাক ক্যামেরার। মেঘে মেঘে বয়স তো আর কম হলো না। সেই ১৫ টাকা সের চাল সময়কার ছেলে আমি। ৪০ টাকা নিয়ে বাজারে যেতাম। এর মধ্যে মাছ-তরকারি, মুদি সদায় সহ দুই টাকা বাঁচিয়ে .....

বই: প্রোডাক্টিভ মুসলিম

বইটি পড়ে কিছু ব্যাপারে আচার্য হয়েছি। বইটি হাতে নিয়ে পড়ার আগে মনে করেছিলাম, এর ভিতরে লেখা থাকবে শুধু কাজ আর কাজ। কিসের ঘুম, কিসের বিশ্রাম আর কিসের অবসর। হয়তো বলা থাকবে, এই দুনিয়াতে কি শুধু ঘুমাতে আসছেন। শুধু কাজ করেন আর অন্য কিছু নয়। পরবর্তীতে ঘুমের উপর চ্যাপ্টার পড়ে আরও বেশি আচার্য হয়েছি যে, .....

বই: ইন দ্য হ্যান্ড অব তা-লে-বা-ন

১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১। মঙ্গলবার। নিউইয়র্ক-বাসীর সকালটা শুরু হয় অন্যান্য দিনের মত! সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা নিউইয়র্কের লোকজন খুব সকালে উঠে যার যার অফিস শুরু করেছে। প্রতিদিনকার সকালের মত হয়তো কেউ কেউ চা-কপি দিয়ে মাত্র অফিস ডেক্সে ওইদিনের মত নিজেকে সেট করে নিচ্ছে। পৃথিবীকে নাড়া দিতে যাচ্ছে এমন কোন ঘটনা ঘটতে চলেছে তখনও এই .....

বই: ফজর আর করব না কাজা!

আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম! মাত্র ফজরের আজান হয়েছে। সামনের বাসার আঙ্কেলের বড় গেটের তালা খোলার খটখট আওয়াজ। তারপর আমার মোবাইলের এক নাম্বার এলার্ম ভেজে উঠলো। একরাশ বিরক্তিসহ এলার্ম বন্ধ করলাম। এই আলতো ঘুমের এমন ঝনঝন তালা খোলার শব্দ আর এলার্মের এমন ভিট-ঘুটে আওয়াজ সত্যিই বিরক্তিকর ছিলো। তারপর কোন রকম উঠে দায়সারা ভাবে নামাজ ঘরে .....

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ রিভিউ: এ আমি কি দেখলাম?

অফিস থেকে মনে হয় একটু তাড়াহুড়া করেই বের হয়েছি। আজকে বাংলাদেশের চির প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলা। কয়দিন আগেও এই অস্ট্রেলিয়াকে মিরপুরের মাঠে আমরা কচুকাটা করেছি। সেই হিসেব মতে আজ একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই উপভোগ করবো। টানটান উত্তেজনা থাকবে। বাংলাদেশ হাড় কাঁপানো ব্যাটিং করবে। মাঠ কাঁপানো ফিল্ডিং করবে। টানটান করে বাউন্ডারি হাঁকাবে। দর্শক সাড়ি থেকে বাংলাদেশ! .....

নাফাখুম জলপ্রপাত – নেটওয়ার্কের বাইরে একদিন

আজকে যাবো। কালকে যাবো। এই বর্ষায় যাবো। এমন করতে করতে এক ট্যুরের প্ল্যান চলে প্রায় দুই বছর ধরে। এর মধ্যে করোনা। লকডাউন। শাটডাউন। মাস্ক। স্যানিটাইজার ইত্যাদি ইত্যাদি পৃথিবীতে নতুন করে আগমন করেছে। অন্যদিকে নাই হয়ে গেছে অনেক পরিচিত মানুষ, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-অনাত্মীয়। প্রতি বছর একটা জংলী ট্যুর দেয়ার ইচ্ছে থাকে। বড়সড় একটু গ্রুপ করে কোন .....

All Post